কর্মকর্তা বরখাস্ত: ড-তে ড্রাইভার, ড-তে ডাক্তার লেখায়
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ‘ড-তে ড্রাইভার, ড-তে ডাক্তার’ লেখায় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেনেটা লিমিটেডের এক কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। ৫ মার্চ তুহিন রেজা নামের প্রতিষ্ঠানের ঐ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বরখাস্তের বিষয়টি জানিয়ে রেনেটার ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। এতে রেনেটার ঐ কর্মীর মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে। রেনেটার ঐ কর্মীর ফেসবুক প্রোফাইলের নাম ‘ঘাসফড়িং তুহিন’।
রেনেটা কর্তৃপক্ষের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের কারখানার কর্মী ঘাসফড়িং তুহিনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসম্মানমূলক মন্তব্যের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি। তার ঐ মন্তব্যটি ছিল ব্যক্তিগত এবং তার মন্তব্য ও আচরণের নিন্দা জানাচ্ছে রেনেটা। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। আরো ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি এ ধরনের আচরণ আমরা কখনোই বরদাশত করব না।’
ঐ কমেন্টের শেষে সবাইকে রেনেটা লিমিটেডের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করা হয়।
এরপর রেনেটা লিমিটেডের ঐ ফেসবুক পেজে কয়েকজন চিকিৎসক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। ঘাসফড়িং তুহিন নামের এ রেনেটা কর্মকর্তার ফেসবুক প্রোফাইলের একটি স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঐ স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ঘাসফড়িং তুহিন নামের ঐ ফেসবুক আইডি থেকে ‘ড তে ড্রাইভার, ড তে ডাক্তার …. কাজ একটাই পাবলিককে জিম্মি করো’ লিখে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে। আর ঐ স্ট্যাটাস নিয়েই ক্ষোভ দেখান অনেকে। ফেসবুকে চিকিৎসকের পরিচয় দেওয়া ঐ সব আইডি থেকে রেনেটার ওষুধ বর্জনের হুমকি দেওয়া হয়।
জবাবে রেনেটার পেজ অ্যাডমিন কর্মীর এই কাজের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ‘অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের’ আশ্বাস দেন। কিন্তু চিকিৎসকদের অনেকেই রেনেটার ওষুধ বর্জন করবেন বলে ঘোষণা দিতে থাকেন। পরে চিকিৎসকদের ক্রমাগত চাপের কাছে নতিস্বীকার করে গত রোববার সন্ধ্যায়ই ঐ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে ঐ দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঐ কর্মকর্তার বরখাস্তের চিঠিও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
মার্চের ৫ তারিখে ইস্যু করা ঐ ‘বরখাস্তের চিঠিতে’ চিঠিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসম্মানজনক মন্তব্যের মাধ্যমে তুহিন রেজা রেনেটা কর্মসংস্থান নীতি ভঙ্গ করেছেন। এটি গুরুতর অসদাচরণ এবং এর জন্য কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রাপ্য।
এই জন্য ৫ তারিখ থেকে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত তুহিন রেজার চাকরি স্থগিত বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
তবে বরখাস্ত করেই ঘটনা শেষ হয়নি। মনির বাদল নামের রেনাটার তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী পরিচয়দানকারী একজন কমেন্ট করে জানান, অভিযুক্তের ফেসবুক আইডি তাৎক্ষণিকভাবে ডিঅ্যাক্টিভেট করেছেন তারা।
পরে ফেসবুকে খুঁজে আর ‘ঘাসফড়িং তুহিন’ নামের আইডিটি পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রেনেটা তাদের ফেসবুক পেজ থেকে তুহিন রেজা (ঘাসফড়িং তুহিন) সংক্রান্ত ঘোষণা ও ছবিগুলো সরিয়ে ফেলে।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ